ঢাকা , শুক্রবার, ১৫ অগাস্ট ২০২৫ , ৩০ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বাঘায় আকস্মিক বন্যায় তলিয়ে গেছে ফসলি জমি! দিশেহারা কৃষক


আপডেট সময় : ২০২৫-০৮-১৪ ২০:৫১:৫৪
বাঘায় আকস্মিক বন্যায় তলিয়ে গেছে ফসলি জমি! দিশেহারা কৃষক বাঘায় আকস্মিক বন্যায় তলিয়ে গেছে ফসলি জমি! দিশেহারা কৃষক

মাসুদ রানা রাব্বানী, রাজশাহী: পদ্মার আকস্মিক বন্যায় রাজশাহীর বাঘা উপজেলার চকরাজাপুর ইউনিয়নে তলিয়ে গেছে শত শত হেক্টর ফসলি জমি। এতে প্রায় ৬০০ পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। ফসল হারিয়ে দিশেহারা কৃষকেরা এখন কাঁচা ধান গরুর খাবার হিসেবে কেটে নিচ্ছেন।

বন্যা ও নদীভাঙনের ঝুঁকিতে রয়েছে বহু বাড়িঘর। সরেজমিনে দেখা যায়, চকরাজাপুর ইউনিয়নের মাঠগুলোতে এখন শুধু পানি আর পানি। দূরে দেখা গেল গলাপানিতে নেমে দুই নারী-পুরুষ কাঁচা ধান কাটছেন।

স্থানীয়রা জানায়, কাঁচা ধান গরুর খাবারের জন্য কেটে নিচ্ছে ভুক্তভোগীরা। নিজেরা কী খেয়ে বাঁচবে, সেই চিন্তায় এখন তারা দিশেহারে। নীচ পলাশী ফতেপুর মাঠে সবচেয়ে বেশি ফসলহানি হয়েছে। যাঁদের ধান কিছুটা পেকেছে, তাঁরা সেটা কাটতে গিয়ে শ্রমিকের সংকটে পড়েছেন। এখন একজন শ্রমিক এক বেলা ধান কাটার জন্য নিচ্ছেন ৮০০ টাকা।

ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক বাবু জানায়, ১০ বিঘা জমিতে পেঁপে বাগান করেছিলেন, এখন কোমরপানিতে তলিয়ে গেছে। বাগানে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি।
বলেন, আমি নিঃস্ব হয়ে গেছি। সবকিছু দিয়ে এই বাগান করেছিলাম। স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ইউনিয়নের পলাশী ফতেপুর, কালিদাসখালী, আতারপাড়া, চৌমাদিয়া এবং দিয়াড়কাদিরপুরের প্রায় ৬০০ বাড়িঘর পানিতে ডুবে গেছে। চকরাজাপুর উচ্চ বিদ্যালয়সহ প্রায় ৫০টি পরিবার নদীভাঙনের ঝুঁকিতে রয়েছে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শফিউল্লাহ সুলতান বলেন, ‘উপজেলার ৭৮ হেক্টর জমির ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের তালিকা করা হচ্ছে এবং ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ব্যবস্থা করা হলে তাদের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শাম্মী আক্তার জানান, প্রাথমিকভাবে ২২০টি পরিবার পানিবন্দী হওয়ার তথ্য পাওয়া গেছে। তিনি বলেন, তাঁদের মধ্যে ১০ কেজি করে চাল বিতরণ করা হবে। পরে বরাদ্দ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এদিকে, রাজশাহীতে বিপৎসীমার কাছাকাছি রয়েছে পদ্মার নদীর পানি। এতে নদীর তীরবর্তী নিম্ন এলাকায় পানি ঢুকে পড়েছে। ঝুঁকি এড়াতে নগরীর টি-বাঁধের কাছে জনসমাগম নিষিদ্ধ করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, রাজশাহী পয়েন্টে পদ্মার পানির বিপৎসীমা ধরা হয় ১৮ দশমিক ০৫ মিটার। বর্তমানে পদ্মার পানি ১৭.৪৯ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, রাজশাহী মহানগরীর বাজে কাজলা, তালাইমারী বালুঘাট বসতী, শহীদমিনার, পঞ্চবটি এলাকার বেশ কয়েকটি বাসায় পানি ঢুকে গেছে। জিনিসপত্র সরিয়ে নিয়ে অন্যত্র আশ্রয় নেয়ার চেষ্টা করছিলেন তারা। এছাড়া অনেকে মাছ ধরার জন্য নদীর তীরে জাল ও বড়শিসহ বিভিন্ন জিনিস নিয়ে অবস্থান করেন। জানতে চাইলে রাজশাহী শহর রক্ষা শাখা উপ-সহকারী প্রকৌশলী, মোঃ আবু হুরায়রা বলেন, ২৪ জুলাই থেকে পদ্মার পানি বাড়তে শুরু করে।

মাঝে একবার কিছুটা কমলেও ৩১ জুলাই থেকে আবার পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে, যার ফলে চরাঞ্চলগুলোর পাশাপাশি রাজশাহী নগরীর পদ্মা পাড়ের বসতীতে পানি ঢুকতে শুরু করেছে। দুইদিন পানি আরো বাড়তে পারে। অবশ্য বন্যার আশঙ্কা নেই। এছাড়া, আমাদের তরফ থেকে বাড়তি প্রস্তুতি রাখা হয়েছে।#



 

নিউজটি আপডেট করেছেন : Banglar Alo News Admin

কমেন্ট বক্স

প্রতিবেদকের তথ্য

এ জাতীয় আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ